বাক্‌ ১১৩ : মিতা চার্বাক




বিনিময়

সন্ধ্যার পানশালার ভিতর একটা বিষণ্ণ বাতাস ঘুরঘুর করছে
শেষে খুব কায়দা করে বাতাসটা কালোরঙা সুটবুট পরা মানুষটার পকেটে চালান হয়ে গেল বাতাসটার এমন সহজ, ষড়যন্ত্রপূর্ণ আচরণে আমি হাসি আটকাতে গিয়েও হেসে ফেললাম

যে সন্ধ্যাগুলোতে আমার করার কিছু থাকে না আমি এখানে এসে বসে থাকি
মানুষের কারবার দেখি

আজকাল মানুষের কারবারে আমার খালি হাই ওঠে


ডান্সফ্লোরে যে দুজন তরুনী নাচছে
সবচেয়ে যে ছোটটা সে এসেছে দূরবর্তী গাঁও থেকেতার দোলানো কোমরের বাঁক থেকে ছড়িয়ে পড়ছে হৈমন্তিক শস্যের ঘ্রাণ
এইসব অগোছালো ঘ্রাণে আমার শরীর বেয়ে সরসর করে ঘুম উঠে আসে


রাতের গায়ে থলথলে অন্ধকাররা গেঁজে উঠছে
পানশালায় ঢুকল পঞ্চাশোর্দ্ধ সেই মোটাসোটা টাইপ লোকটি; সঙ্গে ঝলমলে পোশাক পরিহিতা শহরের দামী এক নারী
লোকটার চোখে কখনও আমার চোখ পড়ে যায়, সেখানে কোনো কৌতুহল অবশিষ্ট নেইএবং আমি তার সাথে কোনো এক নারীকে দ্বিতীয়বারের মতো  দেখিনি


এখানে লাল ওয়াইনের পাত্রে রাত এখনও বাকি
আজকের মত উঠতে যাব, এমন সময়ে কর্ণারের টেবিলের দিকটায় চোখ আটকে গেল

আলোছায়ায় কেউ একজন দাঁড়িয়ে
একটা ফ্যাকাসে হাত তার জীবন বৃত্তান্ত উঁচিয়ে ধরে আছে

এবং ওটা একটা বিনিময় পত্র
গোটা গোটা অক্ষরে লেখা-

আমার একটা দেয়ালে আটকে থাকা টু-পয়েন্ট স্যুইচবোর্ডের জীবন চাই

বহুদিন পর কোন মানুষের আচরণ আমাকে চমৎকৃত করল

                                                (চিত্রঋণ : Francis Bacon)

3 comments:

  1. বাহ... আমারও কোন কাজ না থাকলে, ওখানে বসে থাকি... থাকতামও আগে। ভালো লাগল লেখাটি পড়ে... @ অভিষেক

    ReplyDelete
  2. বরাবরের মত মুগ্ধপাঠ! অফিসক্লান্ত সময়ে ইচ্ছে করছে সব শেষ করে ওখানে গিয়ে আমিও বসে থাকি!

    ReplyDelete
  3. আলোকিত বিষন্নের স্বাদ পাইলাম, বাহে !
    ( বোরিং হইবার আগে আগেই কসমিক কারেন্ট হইয়া যাই, টু-পয়েন্ট সুইচবোর্ডের শইলে )

    ReplyDelete