বাক্‌ ১১৩ ।। পুনরাধুনিক কবিতা ।। রাণা বসু




সামুদ্রিক স্তন

সকালবেলা সমুদ্রের এপার থেকে ওপারের কিছু বোঝা না গেলেও সন্ধ্যেবেলায় বেশ বোঝা যাচ্ছিল যে, ওপারে জনবসতি আছে, কারন আলো দেখা যাচ্ছিল। আমার সমুদ্র দেখলেই মনে হয় ওপারটা নিশ্চই শ্রীলঙ্কা। চারপাশে সমুদ্রের অজস্র স্তন ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। এক একবার পাড়ে এসে আছড়ে পড়লেই দুধ ছড়িয়ে পড়ছে চারপাশে। দুধে স্নান করার এক আশ্চর্য অভিজ্ঞতা হচ্ছে আমার। স্তনগুলো বিভিন্ন প্রকারের এবং তাদের আছড়ে পড়াও বিভিন্নরকম। স্বাভাবিকভাবেই দুধের পরিমানও কম বেশি। এখানে এসে বাসুর ১২০০/- দামের চশমা হারানো - মধুখেলা - সিলনোড়া বা মুখ থেকে ফলিডলের গন্ধ পাওয়া নিয়ে কিছু বলা যায় না। সমুদ্র অত কথা বোঝে না, সে স্তনের আদরের বিনিময়ে এরকম কিছু জিনিস ছিনিয়ে নেয়। আবার ফেরতও দেয়, অবুঝের মত।

প্রেম এখানে এসে ভরা থাকে স্মৃতি সুধায়, হৃদয়পাত্রে। প্রেম একপ্রকারের জরুল, আমি সমুদ্রের ধারে বসে জরুলের সেই টান অনুভব করছিলাম- ভেসে যাচ্ছিলাম জোয়ারের দিকে - ভাঁটার টান তখন অমাবস্যার চাঁদ। প্রত্যেকটা স্তনের মুচড়ে পড়ার সময় বাবার মুখের অস্বস্তি আর যন্ত্রণার কথা মনে পড়ছিল। আমি সিগারেট খাচ্ছিলাম একটানা বাতাসের মত - নিবিড় ও শান্তভাবে। পমফ্রেট মাছের মত চ্যাপ্টা ধোঁয়ায় তখন চারিদিক আক্রান্ত - স্থির কোনো কোনো জলবিন্দু দুধের ফোঁটায় লেগে আমায় মাঝে মাঝে বিব্রত করছিল-- বাবার অজস্র মুখ তখন আছড়ে পড়ছিল বেদীগুলোয়। বাবা স্বস্তি পায়নি। হয়ত আমার সমুদ্রের দিকে ছোঁড়া সিগারেটের পঁদীগুলোর দিকে চেয়েছিল একদৃষ্টে। তাই আছড়ে পড়ছিল বারবার।সমুদ্রের স্তনে ঠোঁট রাখলে সিগারেট খাওয়া যায়না। বাবা বেশি বিড়ি খেত অবশ্য।


            " যে পথে যেতে হবে
              সে পথে তুমিই একা"-র মতো করে সামুদ্রিক উট ঘোরাফেরা করছে।মাঝে মাঝে সামুদ্রিক স্তনের আছড়ে পড়ে ছড়ানো দুধ সদ্য নিষিক্ত ডিম্বানুতে দুধের রেণু ভরে দিয়ে যাচ্ছে। আমি বসে আছি সমুদ্রের পাশে -- সামুদ্রিক রেলিঙের ওপর।

ওপারে এখন হয়ত শ্রীলঙ্কার মেয়েরা স্নান করছে। তাদের স্তনযোনিছোঁয়া জল এপারে আসছে এবং অপেক্ষা করছে সদ্য মাস্টারবেট করা শিশ্ন নির্গত শুক্রানুর। তারপর তারা ফিরে নিয়ে যাচ্ছে ও অন্য কোনও যোনিতে স্থাপন করছে। প্রাকৃতিক নিষেক ঘটাচ্চে সমুদ্র তার সারা শরীর দিয়ে।আমি সিগারেট ছুঁড়ে ফেলে বাবার কথা ভুলে ছুটে গিয়ে মাস্টারবেশনে বসলাম - ১ দুই তিন 4 পাঁচ ৬.....
 সারাদিন সঙ্গোপনে/ সুধারস ঢালবে মনে/ পরাণের পদ্মবনে/ বিরহের বীণাপানি।।

বাবাকে দিনের আলোয় দেখতে পাচ্ছি না আর। শ্রীলঙ্কার আলোরও কোনও দাগ নেই। চলো সমুদ্র- চলো বাবা ও শ্রীলঙ্কা - চলো টাটা - চলো জামশেদপুর।।

                                                     (চিত্রঋণ : সালভাদর দালি)

5 comments: