বাক্‌ ১১৩ : শামস রুবেল




সূর্যমুখী

মাঝেমাঝে ওর ছায়া সমতটে আমায় নিয়ে যাওয়া হতো
ওই গাছের মধ্যে লুকিয়ে গেছে মা যিনি প্রতিবার ফিরে
আসতো জল ভরে আর পথেই শূন্য হতো কলস হৃৎপিণ্ডে
এই একটা ছিদ্র নিয়ে তিনি শৃঙ্খলমুক্তি; করে গেছেন বহুকাল
বাবার সংসার
"জেনেশুনে আমি কোন ভুল করিনি" .
এক কোজাগরী রাতে নিমগাছ থেকে মায়ের দেহটা নামাতে
গিয়ে এটাই ছিল বাবার সুইসাইড নোট চিরদিনের জন্য
গাছের ভেতরে অন্তর্হিত বাবাও বাকলে বাকলে ছেয়ে গেল
তার মুখ!
সেই থেকে একটা নিমগাছকে আমি পাহারা দিয়ে চলি
ফোঁটা-ফোঁটা রক্ত কেউ যেন না ছেঁড়ে ফুল, পাতা, না ভাঙে
ডাল মাটি খুঁড়ে বের না করে ক্ষত!
এভাবে একদৃষ্টে চেয়ে থাকতে থাকতে আমি যেন সূর্যমুখী ফুল
সূর্যমুখী সূর্যের তিপথকে অনুসরণ করে যেদিকে সূর্য সেদিকেই
ঘুরে যায় মুখ আমি দেখতে থাকি ডালে ডালে
আবার সেই কোজাগরী রাত

কিছু চোখ ঘুমাতে গেলেও কিছু চোখ খোলাই থাকে!


খালাম্মা

ওই পাড়ে ইটখোলা, খালাম্মাদের লাল দালান
গজমোতি নোলক মেলে; বাতাসে উড়ে ময়ূরপালক
কেউ কেউ কুড়িয়েও পায়
এই পাড়ে সাহারা, তফাতে খড়ের দোচালা আমাকে থাকতে
হয়!
মাঝখানে ঈষৎ ধনুক রেললাইনটি বয়ে যায়...
বোঁটা ছিঁড়ে দুইখানে আমরা
আসতে যেতে ট্রেনে রেললাইনটি কাটা যায়; আমাদের দেখা হয় না!


বেড়াল

একটা কান তার অন্য কানের চেয়ে বেশি চওড়া চতুর্বেদী
দৃষ্টিতে বেড়ালও ধ্যানী হয় তাকে দেখেছিলাম গাছের
বাকলে নৌকাভাসানো সেই কিশোরের সাহচর্যে মায়ের
কবরের পাশে দেখেছি খেলছে সুড়ঙ্গ খুঁড়ে এটা সত্য গতকাল
সে প্রচন্ড ক্ষুধার্ত আর বিষণ্ণ ছিলো আমার বেডরুম সংলগ্ন
কিচেনে এতো কালো যে সার্ভেয়ার মনে হচ্ছিল উপাস্যক
শয়তানের
ঠিক বুকের ছাতির উপর আজ ঘুম থেকে উঠে আসলে ওটা
কি? বিস্মিত হইনি বেড়াল- যখন... নিশ্চিত সারারাত্রি
নকশা কেটে গেছে আমার কম্পমান হৃৎপিণ্ডটাকে কটা
ইঁদুর ভেবে

                                                (চিত্রঋণ : Tim Burton)

No comments:

Post a Comment